একবিংশ শতাব্দীতে স্বাধীন হওয়া তিন দেশ।



বিদ্র: ফটোর পতাকা কাল্পনিক।

বিংশ শতাব্দীতে এসে শুরু হলো ঔপনিবেশিক তার হাত থেকে মুক্তির সংগ্রাম। নিজে নিজে পথ চলার সংগ্রাম। বিংশ শতাব্দীতেই এই ধরিত্রী সাক্ষী হয়েছে দুটো রক্তক্ষয়ী বিশ্ব যুদ্ধের। আর এই বিংশ শতাব্দীতেই স্বাধীন হয়েছে বহু দেশ। আর এই বিংশ শতাব্দীতেই তৈরি হয়েছে জাতিসংঘ।

একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে স্বাধীন হয় এশিয়ার তিমুর লেসতে বা পূর্ব তিমুর (East Timor/Timor Leste)। এর পর স্বাধীন হয় ইউরোপিয় ভূখণ্ডে কসোভো। যদিও এটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে নিচে আলোচনা করা হবে।

 এর পর গৃহযুদ্ধে আর রক্তক্ষয়ের পরে স্বাধীন হয় বৈচিত্রময় দেশ দক্ষিণসুদান। এটি শুধু আফ্রিকার বুকেই নয় সারা পৃথিবীর সর্ব কনিষ্ঠদেশ।
যদি বয়োজ্যেষ্ঠ থেকে সর্বকনিষ্ট ক্রমে সাজাই তাহলে পাবো।
1. পূর্ব তিমুর (East Timor) - ২০ই মে,২০০২
2. কসোভো ( Kosovo) - ১৭ই ফেব্রুয়ারি,২০০৮
3. দক্ষিণ সুদান ( south sudan) - জুলাই ৯,২০১১

 পূর্ব তিমুর (East Timor/ Timor Leste)

তিমুর লেসতে বা পূর্ব তিমুর অবস্থিত এশিয়া মহাদেশে। এটির সাথে ইন্দোনেশিয়ান তিমুরের ভূসীমা রয়েছে। এবং এর সাথে ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার কোস্টলাইন রয়েছে। এই দেশটি দীর্ঘদিন পর্তুগিজদের দ্বারা উপনিবেশ ছিলো। পরে ডাচরা এই ভূমি জয়ের বহুবার চেষ্টা করলেও পূর্ব তিমুর অঞ্চল পর্তুগিজদের অধীনেই থেকে যায়।

পূর্ব তিমুর অবস্থির তিমুর দ্বীপে। তিমুর দ্বীপের একাংশ ছিলো ডাচ তিমুর অপর অংশ পর্তুগিজ তিমুর। আর পর্তুগিজ তিমুরই আজকে পূর্ব তিমুর। ওপনিবেশ শক্তিরা চলে গেলে ইন্দোনেশিয়া তিমুর দ্বীপ আক্রমনে করে গনহত্যা ও রক্তপাতের মাধ্যমে এই দ্বীপটি দখল করে ইন্দোনেশিয়ার অধিনে নিয়ে নেয় ১৯৭৬ সালে।

যদিও এটি স্বাধীন হবার কথা ছিলো। পরে পূর্ব তিমুর বহুবার স্বাধীন হবার প্রচেষ্টা চালায় কিন্তু ইন্দোনেশিয়ার আক্রমণে দমে যায়।তবে বহু সংগ্রামের পর ২০০২ সালের মে মাসের ২০ তারিখ স্বাধীনতা লাভ করে।

পূর্ব তিমুরের অফিশিয়াল নাম ডেমোক্রেটিক রিপাপলিক অব তিমুর লেসতে (Democratic Republic  of timor leste)। এর আয়তন ১৫,০০৭ বর্গকিলোমিটার। এটি তিমুর দ্বীপের প্রায় অর্ধেকাংশ জুরে অবস্থিত।

এর পাশের কয়েকটি দ্বীপ হলো জ্যাকো,অকুসে,আউতারো এবং ইন্দোনেশিয়ান তিমুর। ইন্দোনেশিয়ান তিমুর দ্বীপে এর একটি এক্সক্লেভ রয়েছে।

এখানে দশ লক্ষাধিক মানুষ বসবাস করে। এখানকার মানুষ পর্তুগিজ আর তিমুর ভাষায় সমান ফ্লুয়েন্ট বলা চলে। তবে তারা ব্যাবসায়ীক উদ্দেশ্যে ইন্দোনেশিয়ান ও ইংরেজি ভাষা শিখছে। এই দেশের ৯৮% লোকে ধর্ম হলো রোমান ক্যাথোলিক।

 কসোভো (Kosovo)

ইউরোপ মহাদেশের সর্বশেষ স্বাধীন রাষ্ট্র হলো কসোভো। এটি একসময় সার্বিয়ার সায়ত্তশাসিত প্রদেশ ছিলো। পরে এটি স্বঘোষিতভাবে স্বাধীন হয়ে যায়। এটি ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্রহিসেবে ঘোষণা করে।


এখন পর্যন্ত ১১২ টি দেশ এটিকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে কিছুদিন আগে ১৪টি দেশ একে স্বাধীনদেশ হিসেবে ঘোষণার  স্বীকৃতি তুলে নিয়েছে। আর সার্বিয়া এর স্বাধীনতাকে এখনো মেনে নেয় নি। এজন্য এর স্বাধীনতায় বিতর্ক রয়েছে।


কসোভো এখনো জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করতে পারেনি। এর অফিশিয়াল নাম দ্য রিপাব্লিক অফ কসোভো। এর আয়তন ১০,৮৮৭ বর্গকিলোমিটার। যা আয়তনের দিকে একে পৃথিবীর ১৭১তম অবস্থানে রাখছে। এখানে বাস করে প্রায় দুই মিলিওন মানুষ।

কসোভো একটি ল্যান্ড-লকড কান্ট্রি।এর মানে এটি খোলা সমুদ্রের সাথে মিশেনি বা সংযোগ নেই।

 দক্ষিন সুদান (South Sudan)

দক্ষিণ সুদান শুধুমাত্র আফ্রিকাতেই নয় সারা পৃথিবীতে এটি সবচেয়ে নতুন রাষ্ট্র। এটি সুদান থেকে ৯জুলাই ২০১১ সালে স্বাধীনতা লাভ করে। এর স্বাধীনতার পিছনে রয়েছে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম।
দক্ষিণ সুদান সারা পৃথিবীর মধ্যে সবচাইতে ডাইভার্স বা বৈচিত্রময় স্থান। সুদানের দ্বারা শোষণের হাত থেকে মুক্তির জন্য দীর্ঘ সময় এটি গৃহযুদ্ধে ছিলো অবশেষে ২০১১ সালে স্বাধীনতার সাধ পায়।


সুদানের দক্ষিণে অবস্থিত।এর সাথে উগান্ডার বর্ডার রয়েছে। এত আয়তন 619,745 বর্গকিলোমিটার। এর রাজধানীর না জুবা (Juba)। এটিই সর্ববৃহৎ শহর। সাম্প্রতি তথ্য মতে দক্ষিণ সুদানে বাস করে প্রায় 10,975,927 জন মানুষ।
দক্ষিণ সুদানের অফিশাল নাম হলো রিপাব্লিক অব সাউথ সুদান। সাউথ সুদান বহুজাতিক ভাষার দেশ। তবে এর অফিশাল ভাষা হচ্ছে ইংরেজি।

গৃহযুদ্ধের ফলের এর বড় একটা জনগোষ্টী পার্শ্ববর্তী দেশ উগান্ডা,কেনিয়া,কঙ্গোতে চলে যায়।
উপরের তথ্যগুলো সময়ের সাপেক্ষে পরিবর্তিত হতে পারে। এগুলো লেখা হয়েছে বর্তমান তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে। তথ্যগুলো উইকিপিডিয়ার মতো ট্রাস্টেড সোর্স থেকে নেয়া।

Comments

Popular posts from this blog

মেলানেশিয়া অঞ্চল পরিচিতি

যে পাঁচটি ভাষা সেখা সবচেয়ে কঠিন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রয়কৃত অন্যতম তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল